অস্ত্র ছাড়তে নারাজ হিজবুল্লাহ, ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতি মানার আহ্বান

1756146390-14bc8cbf789e1f6701f941bb3197c02c.webp
আনোয়ার হোসেন

হিজবুল্লাহর মহাসচিব নাঈম কাসেম স্পষ্ট জানিয়েন, সংগঠনটি কোনোভাবেই অস্ত্র ছাড়বে না। সোমবার বৈরুত থেকে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি বলেন, লেবাননের সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে হলে আগে ইসরায়েলকে আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে এবং যুদ্ধবিরতির শর্ত মানতে হবে।

কাসেম জানান, নভেম্বর ২০২৪ সালের যুদ্ধবিরতি চুক্তি ইসরায়েলকে পূর্ণভাবে মানতে হবে। এর আগে কোনো জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশল বা নিরস্ত্রীকরণ আলোচনা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, ইসরায়েল লেবানন থেকে পুরোপুরি সরে না গেলে, বন্দিদের মুক্ত না দিলে এবং হামলা বন্ধ না করলে হিজবুল্লাহ অস্ত্র নামাবে না।

লেবানন সরকার সম্প্রতি সেনাবাহিনীকে হিজবুল্লাহর অস্ত্র জব্দের পরিকল্পনা করতে নির্দেশ দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে এই উদ্যোগ নেওয়া হলেও হিজবুল্লাহ এটিকে ‘অকার্যকর সিদ্ধান্ত’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। কাসেমের দাবি, এই সরকার বর্তমান অবস্থায় লেবাননের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে সক্ষম নয়।

অন্যদিকে, ইসরায়েল জানিয়েছে, লেবাননের সেনাবাহিনী যদি নিরস্ত্রীকরণ কার্যকর করে তবে তারা ধাপে ধাপে দক্ষিণ লেবানন থেকে সেনা কমাতে রাজি। এ বিষয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু মার্কিন দূত টম ব্যারাকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ব্যারাকও ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতি মানার আহ্বান জানিয়েছেন।

বর্তমানে ইসরায়েল দক্ষিণ লেবাননের পাঁচটি স্থানে অবস্থান করছে। যদিও গত নভেম্বরের যুদ্ধবিরতি অনুযায়ী তাদের দুই মাসের মধ্যে সরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনও ইসরায়েল প্রায় প্রতিদিন বিমান হামলা চালাচ্ছে, যাতে সাধারণ মানুষ, সিরীয় শরণার্থী নিহত ও আহত হচ্ছে এবং ঘরবাড়ি ধ্বংস হচ্ছে। সোমবার এক ড্রোন হামলায় দক্ষিণ লেবাননে একজন নিহত হয়েছেন। ইসরায়েল দাবি করেছে, ওই হামলায় তারা হিজবুল্লাহর এক সদস্যকে হত্যা করেছে।

হিজবুল্লাহ লেবাননের একমাত্র গোষ্ঠী যারা ১৯৭৫-১৯৯০ সালের গৃহযুদ্ধের পরও অস্ত্র ধরে রেখেছে। গত বছর ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে সংগঠনটি বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ে। তাদের সাবেক প্রধান হাসান নাসরাল্লাহসহ বহু শীর্ষ নেতা নিহত হয়েছেন, হাজারো যোদ্ধা ও সাধারণ নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন, এবং বহু পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ আসছে সোমবার দক্ষিণ লেবাননে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন (ইউএনআইএফআইএল)-এর মেয়াদ ২০২৬ সালের আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানোর বিষয়ে ভোট দিতে যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top