আত্মতৃপ্তির সুযোগ নেই

prothomalo-bangla_2025-08-21_snu4v96t_Capture.avif
আনোয়ার হোসেন

বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি কমেছে। তবে আত্মতৃপ্তির ঢেকুর তোলার সুযোগ নেই। এখনো মূল্যস্ফীতির হার সাড়ে ৮ শতাংশ। মানে হলো, গত বছর যে পণ্য কিনতে ১০০ টাকা লাগত, সেটা কিনতে এখন ১০৮ টাকার বেশি লাগছে। এই মূল্যস্ফীতিও সীমিত আয়ের মানুষের জন্য সহনীয় নয়। কারণ, এখন অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভালো নেই। মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ কম।

শুধু দক্ষিণ এশিয়া নয়, পুরো এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি থাকা দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ। ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কা দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিল। মূল্যস্ফীতি ব্যাপকভাবে বেড়ে গিয়েছিল। পরে গণ-অভ্যুত্থানে শ্রীলঙ্কায় রাজাপক্ষে সরকারের পতন হয়। দেশটি অর্থনৈতিক দিক দিয়ে যেমন ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তেমনি একটি ভালো নির্বাচন করে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাও অর্জন করেছে। শ্রীলঙ্কার নতুন সরকার সর্বশেষ বাজেটে সাধারণ মানুষের জন্য কল্যাণকর নানা উদ্যোগ নিয়েছে।

বাংলাদেশে গত জুনে অন্তর্বর্তী সরকার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট দিয়েছে। কিন্তু সেই বাজেটে নিম্ন ও সীমিত আয়ের মানুষের জন্য বিশেষ কিছু করা হয়নি। আগের মতো বাজেটই হয়েছে, কিছুটা এদিক-সেদিক করে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সবচেয়ে বেশি প্রাণ দিয়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। তাঁদের জন্য এ সরকার বাড়তি কী করেছে?

পাকিস্তান বাংলাদেশের চেয়ে বেশি অর্থনৈতিক দুর্দশায় পড়েছিল। মূল্যস্ফীতি ৩৫ শতাংশ ছাড়িয়েছিল। পাকিস্তানও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ঋণ নিয়েছে। দেশটিতে মূল্যস্ফীতি কমেছে। এখন মূল্যস্ফীতি বাংলাদেশের অর্ধেকের কম।

আমরা অনেক দিন ধরে বলছি, শুধু ঋণের সুদের হার বাড়িয়ে এবং বাজারে টাকার সরবরাহ কমিয়ে মূল্যস্ফীতি নাগালে আনা যাবে না। সেটা হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পরও দেখা যাচ্ছে, মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৮ শতাংশ রয়ে গেছে। জুনে কিছুটা কমলেও জুলাইয়ে আবার কিছুটা বেড়েছে।

বিগত রমজানে বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্য অনেকটা স্থিতিশীল ছিল। কারণ, তখন কিছু পণ্যের মৌসুম ছিল। কিছু পণ্যে শুল্ক ছাড় ও ডলারের সরবরাহ বাড়ায় আমদানিও বেড়েছিল। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরে বাজারব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনা, প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি ইত্যাদি ক্ষেত্রে সংস্কার কতটা হয়েছে?

সেলিম রায়হান: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়নবিষয়ক কমিটি এবং অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণসংক্রান্ত টাস্কফোর্সের সদস্য।

সেলিম রায়হান, অর্থনীতিবিদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top