অ্যাস্টন ভিলার অনুশীলন মাঠ বডিমুর হিথে ট্রান্সফার উইন্ডোর শেষ দিনটা কাটিয়েছেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। অপেক্ষায় ছিলেন একটা ফোন কলের। ফোনটা আসার কথা ছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে। কিন্তু সেই ফোন কল আর আসেনি।
অ্যাস্টন ভিলা ছেড়ে ইউনাইটেডে যেতে চেয়েছিলেন আর্জেন্টিনার এই এক নম্বর গোলরক্ষক। সেই ইচ্ছেটা লুকিয়েও রাখেননি। এমনকি জাতীয় দলের সতীর্থ ও ইউনাইটেড ডিফেন্ডার লিসান্দ্রো মার্তিনেজকে নাকি অনুরোধও করেছিলেন, যেন ইউনাইটেডের কর্তাদের সঙ্গে তাঁর হয়ে কথা বলেন।
লিসান্দ্রো সেটা করেছেনও। তবে ইউনাইটেডের পক্ষ থেকে মার্তিনেজের সঙ্গে একমাত্র যোগাযোগটা হয়েছিল মাসখানেক আগে, ভিলা তাঁকে ধারে দিতে পারবে কি না, সেই খোঁজখবরের জন্য।
এখন তাহলে মার্তিনেজের ভবিষ্যৎ কী?
আন্তর্জাতিক বিরতি শেষে তাঁকে আবার দলে ফেরানো হবে—দ্য অ্যাথলেটিককে এমনটাই জানিয়েছে ভিলা ও মার্তিনেজের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র। তবে সবকিছু নির্ভর করছে মার্তিনেজের মনোভাবের ওপর।
মার্তিনেজকে নয়, শেষ পর্যন্ত ইউনাইটেড কিনেছে বেলজিয়ামের গোলরক্ষক সেনে লামেন্সকে। রয়্যাল আন্টওয়ার্পের সঙ্গে লামেন্সের ব্যাপারে ইউনাইটেড যখন কথাবার্তা বলছে, মার্তিনেজ সেই সময়ে উড়াল দেন আর্জেন্টিনায়। ভেনেজুয়েলা আর ইকুয়েডরের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচের জন্য। প্রথম ম্যাচে ৩–০ গোলে জিতে ক্লিন শিট রেখেছেন আর্জেন্টাইন গোলকিপার।
জাতীয় দলের কোচ লিওনেল স্কালোনি অবশ্য আশ্বস্ত করেছেন, মার্তিনেজ ভালোই আছেন, ‘ট্রান্সফারটা হয়নি, কিন্তু ওর জন্মদিনে আমি ওকে খুশি দেখেছি।’ স্কালোনি আরও বলেন, ‘ইউনাইটেডে যাওয়ার ইচ্ছা থাকাটা স্বাভাবিক। কিন্তু সে ইতিবাচক ছেলে। এখন পুরো মনোযোগ জাতীয় দলে। ক্লাবে ফিরলেই আবার ওদের জন্য মনোযোগ দেবে।’
ভিলার জন্য অবশ্য মার্তিনেজ-সমস্যার দ্রুত সমাধান দরকার। মৌসুম শুরুর পর থেকে দলটির সময় তেমন ভালো যাচ্ছে না। আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে দলে তেমন পরিবর্তনও আনা যায়নি। ট্রান্সফার উইন্ডো শেষের আগের দিন ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে ৩-০ গোলে হারের ম্যাচে মার্তিনেজকে স্কোয়াডেই রাখেননি কোচ উনাই এমেরি। তার কারণ হিসেবে এমেরি বলেছিলেন যে মার্তিনেজের ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা দলকে সাহায্য করছে না।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবর, ভিলার ভেতরে অনেকেই মনে করেন যে, মার্তিনেজের বিকল্প হিসেবে এখন দুই নম্বর পছন্দ যিনি, সেই মার্কো বিজোত বেশ যোগ্য গোলকিপার। যদিও ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে ম্যাচে পেনাল্টি থেকে গোল হজম করেছিলেন তিনি। তবে এটা সত্যি, ফিট থাকলে মার্তিনেজ নিঃসন্দেহে দুর্দান্ত গোলকিপার, যার উপস্থিতি এবং সামর্থ্য অ্যাস্টন ভিলাকে বাড়তি শক্তি ও আত্মবিশ্বাস দেয়। এমেরিও হয়তো তাই মার্তিনেজকেই প্রথম পছন্দ হিসেবে রাখতে চাইবেন।
আর মার্তিনেজ কী ভাবছেন? বুয়েনস এইরেসে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে ৩-০ গোলে আর্জেন্টিনার জয়ের পর ফক্স স্পোর্টস আর্জেন্টিনার একজন সাংবাদিক মার্তিনেজকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, আবহাওয়া কেমন ছিল? মার্টিনেজ হেসে উত্তর দেন, ‘বার্মিংহামের মতো অতটা ঠান্ডা তো নয়!’ এরপর সেই সাংবাদিক জানতে চান, এই মৌসুমেও মার্তিনেজ বার্মিংহামে থাকছেন কি না?
আর্জেন্টাইন গোলকিপার হেসে উত্তর দেন, ‘হ্যাঁ, হ্যাঁ, একদম ঠিক।’
উত্তরটা তো পেয়ে গেল ভিলাও।