উদ্বোধনের পরদিনই বৈদ্যুতিক তার চুরি, অন্ধকারে স্বপ্নের মওলানা ভাসানী সেতু

1755853944-eab80e61841dcc22975aae7273054af0.webp
আনোয়ার হোসেন

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ হরিপুর-কুড়িগ্রামের চিলমারী সংযোগ সড়কে তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত বহুল প্রতীক্ষিত ‘মওলানা ভাসানী সেতু’ উদ্বোধনের পরদিনই পড়েছে চরম নিরাপত্তাহীনতায়। সেতুর ল্যাম্পপোস্টের বিদ্যুতের তার ও কানেক্টর পিন চুরি হয়ে যাওয়ায় পুরো সেতুটি অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছে। এতে যানবাহন ও পথচারীদের চলাচল এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে, আর দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়েছে কয়েকগুণ।

শুক্রবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেন গাইবান্ধা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জল চৌধুরী। তিনি জানান, উদ্বোধনের পরদিন রাতেই দুর্বৃত্তরা ল্যাম্পপোস্টের একাধিক বৈদ্যুতিক তার ও কানেক্টর পিন কেটে নিয়ে গেছে। ফলে সেতুর আলোকসজ্জা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়।

এর আগে, বৃহস্পতিবার রাতেই লাইট না থাকায় সেতুটি অন্ধকারে ডুবে যায়। অনেক যাত্রী ও স্থানীয়রা লাইট বন্ধ থাকা অবস্থার ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেন। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে তার কেটে নেওয়া অন্ধকারের ল্যাম্পপোস্টগুলোর ছবিও।

পথচারী, যানচালক, দর্শনার্থী ও স্থানীয়রা জানান, আলো না থাকায় সন্ধ্যার পর থেকে রাতভর সেতুতে চলাচল করতে হচ্ছে অন্ধকারে। এতে ছোট-বড় দুর্ঘটনার শঙ্কা সবসময় থেকে যাচ্ছে।

স্থানীয়দের দাবি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেতুর ল্যাম্পপোস্টে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে আলো ফিরিয়ে আনা হোক। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের চুরি বা নাশকতার ঘটনা আর না ঘটে, সে জন্য কার্যকর ও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।

এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জল চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আমরা রাতেই জানতে পারি। উদ্বোধনের পরদিন কোনো এক সময়ে দুর্বৃত্তরা সেতুর ল্যাম্পপোস্টের বৈদ্যুতিক তার চুরি করেছে। আমরা দুষ্কৃতিকারীদের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেব। একই সঙ্গে দ্রুত নতুন করে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজ শুরু হবে। পাশাপাশি সেতুতে সার্বক্ষণিক পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, বিষয়টি গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই সাথে জড়িতদের শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি বলেন, সেতুর শৃঙ্খলা রক্ষায় আজ থেকে সেখানে পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য রাখার পাশাপাশি দ্রুতই একটি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা হবে এবং সেতু এলাকায় স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের জন্যও কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে সেটি অনুমোদন হবে।

উল্লেখ্য, গত ২০ আগস্ট দুপুর পৌনে ২টায় উত্তরাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ‘মওলানা ভাসানী সেতু’ উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। উদ্বোধনের পর থেকেই প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ সেতুটি দেখতে ভিড় করছেন। দর্শনার্থীদের প্রত্যাশা, সেতু যেন নিরাপদ ও আলোকোজ্জ্বল পরিবেশে উপভোগ করা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top