ফুরিয়ে যাচ্ছে গ্যাসের মজুত

prothomalo-bangla_2025-08-24_llsi49oa_5483bbc2-6798-4d1c-b9d0-1934ee2bfa31.avif
আনোয়ার হোসেন

দেশে গ্যাসের মজুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। উৎপাদন কমছে ধারাবাহিকভাবে। নতুন গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান না পেলে এবং নতুন খনি থেকে উত্তোলন শুরু না হলে আগামী আট বছরেই দেশীয় মজুত শেষ হয়ে যেতে পারে।

বর্তমানে দেশীয় গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে দিনে ১৮০ কোটি ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হয়। ২০১৭ সালে তা ছিল ২৭০ কোটি ঘনফুটের আশপাশে। অর্থাৎ দেশীয় গ্যাসের উত্তোলন ৩৩ শতাংশ কমেছে।

দেশের খনি থেকে উৎপাদন কমে গেলে গ্যাসের আমদানিনির্ভরতা বাড়ে। সে জন্য বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হয়। ফলে চাপ বাড়ে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভে।

২০১৮ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার গ্যাস আমদানি শুরু করে। এখন যে ডলারের দাম বেড়ে ১২৩ টাকা হয়েছে, সব পণ্যের দাম বেড়ে গেছে, তার পেছনে বড় একটি কারণ গ্যাসের আমদানিনির্ভরতা। আমদানি করতে গিয়েই রিজার্ভ কমেছে। ডলারের দাম বেড়েছে। সঙ্গে দফায় দফায় গ্যাসের দাম বাড়াতে হয়েছে।

তিনটি কৌশল নেওয়া হয়েছে—কূপ খনন করে উৎপাদন বাড়ানো, দেশে গ্যাসের নতুন মজুত আবিষ্কারে স্থলে ও সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধান বাড়ানো এবং আমদানির সক্ষমতা বাড়াতে স্থলভাগে একটি টার্মিনাল নির্মাণ করা।

মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা

এর মাশুল দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। ভোজ্যতেল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, রান্নার প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি এবং তার ফলে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় এতটা বাড়ত না, যদি দেশীয় গ্যাসক্ষেত্র থেকে প্রয়োজনীয় গ্যাস উৎপাদন বাড়িয়ে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা যেত।

দেশীয় গ্যাসের প্রতি ইউনিট (ঘনমিটার) দাম পড়ে তিন টাকার আশপাশে। আর বিদেশ থেকে আমদানিতে খরচ ৫৫ টাকার মতো। তা–ও এখন গ্যাসের দাম কম বলে খরচ কম পড়ছে।

অর্থনীতিবিদ ও শিল্পমালিকেরা বলছেন, বিভিন্ন দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কারোপের কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি খাত ও বিনিয়োগে একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এই সম্ভাবনা ধরার ক্ষেত্রে জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে এবং তা সাশ্রয়ী দামে। সে জন্য দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানো জরুরি।

সরকারও সেটা বোঝে। এ জন্য দেশে উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান প্রথম আলোকে বলেন, দেশীয় গ্যাসের মজুত বিবেচনায় তিনটি কৌশল নেওয়া হয়েছে—কূপ খনন করে উৎপাদন বাড়ানো, দেশে গ্যাসের নতুন মজুত আবিষ্কারে স্থলে ও সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধান বাড়ানো এবং আমদানির সক্ষমতা বাড়াতে স্থলভাগে একটি টার্মিনাল নির্মাণ করা। পাশাপাশি গ্যাস চুরি ও অপচয় রোধ করে গ্যাসের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

মজুত কতটা আছে

বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) সূত্র বলছে, দেশে গ্যাসের মজুত নিয়ে সর্বশেষ সমীক্ষা চালানো হয় ২০১০ সালে। ওই সময় বিদেশি কোম্পানিকে দিয়ে বৈজ্ঞানিকভাবে মজুতের হিসাব করা হয়েছিল। তখন বলা হয়েছিল, উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের মজুত ২৮ দশমিক ৭৯ টিসিএফ (ট্রিলিয়ন বা লাখ কোটি ঘনফুট)। ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত ২০ দশমিক ৩৩ টিসিএফ গ্যাস উত্তোলন করা হয়ে যায়। এতে মজুত বাকি থাকে সাড়ে ৮ টিসিএফের মতো।

২০২৩ সালে পেট্রোবাংলা গ্যাস উত্তোলনকারী কোম্পানিগুলোকে দিয়ে মজুত কত আছে, তা নতুন করে পর্যালোচনা করায়। এতে দেখা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মজুত দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩০ টিসিএফ। অবশ্য সে পর্যন্ত উৎপাদন করা হয়েছে প্রায় ২২ টিসিএফ গ্যাস। ফলে মজুত রয়েছে ৮ টিসিএফের মতো।

দেশে এখন বছরে গড়ে গ্যাস উৎপাদন করা হয় পৌনে এক টিসিএফ গ্যাস। এ হিসাবে মজুত গ্যাস দিয়ে আরও বর্তমান হারে প্রায় ১১ বছর উৎপাদন চলার কথা। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খনিতে শেষ দিকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে গ্যাস রেখে উত্তোলন বন্ধ করে দিতে হয়। কারণ, সেই গ্যাস বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলনযোগ্য থাকে না, কিন্তু মজুতের হিসাবে ধরা হয়। বিশেষজ্ঞরা এসব বিবেচনায় নিয়ে মজুত গ্যাস দিয়ে আর আট বছরের মতো চলতে পারে বলে প্রাক্কলন করছেন, তা–ও বর্তমান হারে উত্তোলন ধরে।

উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের মজুত ২৮ দশমিক ৭৯ টিসিএফ (ট্রিলিয়ন বা লাখ কোটি ঘনফুট)। ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত ২০ দশমিক ৩৩ টিসিএফ গ্যাস উত্তোলন করা হয়ে যায়। এতে মজুত বাকি থাকে সাড়ে ৮ টিসিএফের মতো।

কোন খনিতে কত মজুত

পেট্রোবাংলার তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ২৯টি গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে। এর মধ্যে উৎপাদনে আছে ২০টি। বাকিগুলোর মধ্যে চারটি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করা হলেও উত্তোলন করা হচ্ছে না। সেগুলো হলো ভোলার ইলিশা ও ভোলা নর্থ, সিলেটের জকিগঞ্জ এবং কুতুবদিয়া। এসব খনি থেকে গ্যাস উত্তোলনের জন্য পাইপলাইন ও অন্যান্য অবকাঠামো তৈরি হয়নি।

বাকি পাঁচটি খনিতে ৬৬১ বিসিএফ গ্যাস থাকা অবস্থায় বিভিন্ন সময় উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কারণ, ওই গ্যাস বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলনযোগ্য নয়। খনিগুলো হলো নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ, সিলেটের ছাতক, গাজীপুরের কামতা, ফেনী ও সাংগু (চট্টগ্রাম)।

২০২৪ সালের ১ জুলাইয়ের হিসাবে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাসে অবশিষ্ট মজুত আছে প্রায় ২ টিসিএফ। হবিগঞ্জের বিবিয়ানায় আছে ১ দশমিক ৬৬ টিসিএফ। সিলেটের মৌলভীবাজারে আছে প্রায় ২০ বিসিএফ (বিলিয়ন বা শতকোটি ঘনফুট) গ্যাস। ৭০০ বিসিএফের কম মজুত আছে জালালাবাদে। সিলেটের বাখরাবাদ, কৈলাসটিলা, রশিদপুরসহ বাকি গ্যাসগুলোতেও মোটামুটি পরিমাণে গ্যাসের মজুত আছে।

আমদানিতে ঝোঁক

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার গ্যাস অনুসন্ধান বাদ দিয়ে আমদানির দিকে ঝুঁকে পড়েছিল। তখন কক্সবাজারের মহেশখালীতে দুটি টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়, যেখানে জাহাজে করে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) এনে তা আবার রূপান্তর করে পাইপলাইনে দেওয়া হয়।

২০১৮ সালে শুরু হয় গ্যাস আমদানি। তখন বিশ্ববাজারে গ্যাসের দাম কম ছিল, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত যথেষ্ট ছিল। কিন্তু অনেকে তখনই সতর্ক করে বলেছিলেন, বিদেশে দাম বেড়ে গেলে অর্থনীতি সংকটে পড়তে পারে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ শুরুর পর বিশ্ববাজারে গ্যাসের দাম বেড়ে যায়। বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ।

২০১৮ সালে বাংলাদেশ প্রতি এমএমবিটিইউ (ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট) গ্যাস কিনেছিল ৪ ডলার ধরে। ২০২২ সালে তা দাঁড়ায় ৬০ ডলার। গ্যাসের সঙ্গে অন্যান্য পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশে আমদানি খরচ বেড়ে যায়। কমে যায় ডলারের মজুত, বাড়তে থাকে দাম। ডলার–সংকটে ২০২২ সালে টানা ৭ মাস খোলাবাজার থেকে গ্যাস আমদানি বন্ধ রাখতে হয়েছিল। বিগত সরকার বিপুল দেনাও তৈরি করেছিল, যা বর্তমান সরকার শোধ করেছে। এখন অবশ্য এলএনজির দাম বিশ্ববাজারে ১৫ ডলারের নিচে।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম প্রথম আলোকে বলেন, আগের সরকারের ভ্রান্ত নীতি ও পরিকল্পনার জেরে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা মোকাবিলা করতে হচ্ছে বর্তমান সরকারকে। তবে এ সরকারেরও অনুসন্ধানের চেয়ে এলএনজি আমদানির দিকে ঝোঁকটা বেশি দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার মজুত কমায় বিদেশ থেকে গ্যাস আমদানির বিলাসিতা দেখানোর সুযোগ নেই। অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব সবার জানা। এখন দরকার বিকল্প সমাধানের উদ্যোগ।

সিলেটের মৌলভীবাজারে আছে প্রায় ২০ বিসিএফ (বিলিয়ন বা শতকোটি ঘনফুট) গ্যাস। ৭০০ বিসিএফের কম মজুত আছে জালালাবাদে। সিলেটের বাখরাবাদ, কৈলাসটিলা, রশিদপুরসহ বাকি গ্যাসগুলোতেও মোটামুটি পরিমাণে গ্যাসের মজুত আছে।

কূপ খননের উদ্যোগ

চাপে পড়ে ২০২২ সালেই আওয়ামী লীগ সরকার দেশে উত্তোলন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছিল। পেট্রোবাংলা বলছে, তখন অনুসন্ধান, সংস্কার ও উন্নয়ন মিলিয়ে ৫০টি কূপ খননের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। তা করা গেলে জাতীয় গ্রিডে দিনে প্রায় ৬৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হওয়ার কথা। যদিও এ ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার ছিল না। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর কূপ খননে জোর দিয়েছে। নতুন করে আরও ১০০ কূপ খননের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে অগ্রাধিকার বিবেচনায় ৩১টি পুরোনো কূপ সংস্কারে জোর দিয়েছে সরকার। সংস্কার করলে উৎপাদন বাড়ানোর সুযোগ থাকে।

সম্ভাব্য গ্যাসক্ষেত্রে কূপ খননের মাধ্যমে গ্যাস আছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়। পাওয়া গেলে কূপের মাধ্যমেই উত্তোলন শুরু হয়।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মো. রেজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে স্বল্প সময়ে ফল পাওয়া কঠিন। গ্যাস উৎপাদনে অধিকাংশ কূপের চুক্তি হয়ে গেছে। বেশ কিছু কূপের কাজ শেষ পর্যায়ে। আগামী নভেম্বর থেকে প্রতি মাসেই নতুন কিছু গ্যাস যুক্ত হবে। এ ছাড়া আগামী বছর থেকে আরও ১০০ কূপ খননের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

জ্বালানি বিভাগ বলছে, এখন সংস্কার, উন্নয়ন ও নতুন খনন মিলিয়ে ৫০টি কূপের প্রকল্প চলমান আছে। সব মিলিয়ে আগামী দুই থেকে তিন বছরে দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বৈদেশিক মুদ্রার মজুত কমায় বিদেশ থেকে গ্যাস আমদানির বিলাসিতা দেখানোর সুযোগ নেই। অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব সবার জানা। এখন দরকার বিকল্প সমাধানের উদ্যোগ।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম

নতুন গ্যাসক্ষেত্রের খোঁজ কত দূর

দেশের সবচেয়ে বড় গ্যাসক্ষেত্রে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস আবিষ্কৃত হয়েছিল ১৯৬২ সালে। সর্বশেষ বড় গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল ১৯৯৮ সালে, সেটি সিলেটের বিবিয়ানা। বিবিয়ানা থেকেই এখন সবচেয়ে বেশি গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। এরপর আর কোনো বড় গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ ২০২১ সালে সিলেটের জকিগঞ্জে একটি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়। যদিও সেখানে মজুত মাত্র ৫২ বিসিএফ।

বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। বহুমাত্রিক জরিপেও সে সম্ভাবনা দেখা গেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সমুদ্রে গ্যাস আবিষ্কার করা যায়নি। যদিও ভারত ও মিয়ানমার বঙ্গোপসাগর থেকে বিপুল গ্যাস উত্তোলন করছে। বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য নতুন উৎপাদন অংশীদারত্ব চুক্তির (পিএসসি) খসড়া তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে পেট্রোবাংলা। উল্লেখ্য, ২০১২ সালে ভারতের সঙ্গে এবং ২০১৪ সালে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি হয়।

ভূতত্ত্ববিদ বদরূল ইমাম প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের জন্য বাংলাদেশ খুবই সম্ভাবনাময়। সম্ভাবনার খুবই ক্ষুদ্র অংশ আবিষ্কৃত হয়েছে। একটা গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হলে আরেকটা পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। নীতিনির্ধারকেরা এটি করতে চান না। কোনো সরকার অনুসন্ধানে জোর দেয় না। তিনি বলেন, ব্যাপক হারে অনুসন্ধান চালাতে হবে। সরকারের উচিত দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া।

‘আমরা সাশ্রয়ী মূল্যে গ্যাস চাই’

কারখানা চালাতে গ্যাস ও বিদ্যুৎ দরকার। বিদ্যুৎ উৎপাদনে দরকার গ্যাস। নতুন বিনিয়োগ না হলে কর্মসংস্থান বাড়বে না, তরুণেরা কাজ পাবে না। ফলে মানুষের জীবিকা ও দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি অনেকটা নির্ভর করে গ্যাসের ওপর। শিল্পের সক্ষমতা ধরে রাখতে দরকার সাশ্রয়ী মূল্যের গ্যাস।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে শিল্পে গ্যাসের দাম ১৭৯ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছিল। তখন বলা হয়েছিল, আমদানি বাড়ানো হবে। তাই দাম বাড়ানো দরকার। কিন্তু দাম বাড়িয়ে আমদানি আর বাড়াতে পারেনি তৎকালীন সরকার। বর্তমান সরকার নতুন সংযোগের ক্ষেত্রে গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে ৩৩ শতাংশ। এখন আমদানি কিছুটা বেড়েছে।

বাংলাদেশ নিট পোশাক রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) সাবেক সভাপতি ফজলুল হক প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। নিজেদের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে এখন বড় ইস্যু নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ। তিনি বলেন, ‘আমরা সাশ্রয়ী মূল্যে গ্যাস চাই। এ জন্য আমদানির ওপর নির্ভর না করে দেশে উত্তোলন জরুরি। এ ক্ষেত্রে অনেক আগেই জোর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার ছিল।’

গ্যাসের জন্য বাংলাদেশ খুবই সম্ভাবনাময়। সম্ভাবনার খুবই ক্ষুদ্র অংশ আবিষ্কৃত হয়েছে। একটা গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হলে আরেকটা পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। নীতিনির্ধারকেরা এটি করতে চান না। কোনো সরকার অনুসন্ধানে জোর দেয় না।

ভূতত্ত্ববিদ বদরূল ইমাম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top