বাংলাদেশের সম্ভাবনা দেখছেন সুজন

1756144404-dd2f06450939853515957b46dbdc4725.webp
আনোয়ার হোসেন
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিনভর অনুশীলন করছেন টাইগার ক্রিকেটাররা। দিনের প্রথম সেশনে ব্যাটিং ও বোলিং করছেন তারা। হেড কোচ ফিল সিমন্স, বোলিং কোচ শন টেইটরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনে টিপস দিচ্ছেন। সন্ধ্যায় ফ্লাডলাইটে ম্যাচ আবহে ফিল্ডিং ও ক্যাচিং করছেন লিটনরা। আজ সন্ধ্যায় ক্রিকেটাররা একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবেন নিজেদের মধ্যে ভাগ হয়ে। সিলেটে লিটনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল কঠোর অনুশীলন করছেন নেদারল্যান্ডস সিরিজ ও টি-২০ এশিয়া কাপের প্রস্তুতি হিসেবে। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি-২০ সিরিজ ৩০ আগস্ট শুরু। আট দলের টি-২০ এশিয়া কাপ শুরু ৯ সেপ্টেম্বর। ‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশ খেলবে ১১ সেপ্টেম্বর হংকং, ১৩ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কা ও ১৬ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের বিপক্ষে। প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কা থাকার পরও সুপার ফোরে খেলবে বাংলাদেশ আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে বলেন সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন, ‘প্রতিপক্ষ দল হিসেবে আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কা যথেষ্ট শক্তিশালী। তারপরও আমি বিশ্বাস করি, গ্রুপের সব ম্যাচ জিতেই সুপার ফোরে খেলবে।’

সুপার ফোরে আফগানিস্তান বা শ্রীলঙ্কা, ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলতে হবে লিটনদের। ভারতকে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ মনে করেন সাবেক অধিনায়ক। টি-২০ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারতকে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ ধরেই মাহমুদ বিশ্বাস করেন টি-২০ এশিয়া কাপের শিরোপাও জিততে পারে বাংলাদেশ, ‘টি-২০ ক্রিকেটে ভারত প্রতিপক্ষ হিসেবে যথেষ্ট শক্তিশালী। কিছুদিন আগে আমরা পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছি। আমরা এখন ভালো ক্রিকেট খেলছি। আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের ভালো করার সম্ভাবনা উজ্জ্বল।’ এশিয়া কাপে তিনবার ফাইনাল খেলেছে বাংলাদেশ। ২০১২, ২০১৬ ও ২০১৮ সালে রানার্সআপ হয়। এবারের এশিয়া কাপ মূলত আয়োজিত হচ্ছে আগামী ফেব্রুয়ারিতে টি-২০ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে।

বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এখন তারুণ্যনির্ভর। দলে জায়গা হয়নি এক সময়কার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও ওয়ানডে অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজের। তিন বছর পর দলে ফিরেছেন নুরুল হাসান সোহান ও দুই বছর পর ফিরেছেন সাইফ হাসান। তারুণ্যনির্ভর দলটির জন্য এশিয়া কাপ চ্যালেঞ্জিং। তারপরও সবাইকে দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে বলেন মাহমুদ, ‘আপনি তখনই সাফল্য পাবেন, যখন দলটির ব্যাটিং দীর্ঘ হবে। ওপেনারদের একটি শক্তিশালী ভিত দিতে হবে। এ ছাড়া মিডল অর্ডারকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। লেট মিডল অর্ডারকে ইনিংসগুলো লম্বা করতে হবে।’ দুই ওপেনার তানজিদ তামিম ও পারভেজ হোসেন ইমন এখন ভরসার প্রতীক হয়ে উঠছেন টাইগারদের। দুজনের ব্যাটিংয়ের ওপর সাফল্য নির্ভর করবে বলেন মাহমুদ, ‘তানজিদ ও ইমন দুজনে দারুণ খেলছে। যদি দুজনে এখনো একসঙ্গে ক্লিক করতে পারেনি। দুজনে একসঙ্গে ক্লিক করলে ৬ ওভারের পাওয়ার  প্লেতে ৭০-৮০ রান উঠা অসম্ভব নয়।’ মিডল অর্ডারে লিটন ও তাওহিদ হৃদয়কে ধারাবাহিক হওয়ার পরামর্শ দেন সাবেক অধিনায়ক, ‘লিটন ও তাওহিদ হৃদয় ধারাবাহিক নন। তাদের ধারাবাহিক হতে হবে। জাকের আলি অনিক ভালো করছে। তাকে সহযোগিতা করতে হবে। শেষ দিকে আমাদের তানজিম তামিম ও সাইফুদ্দিন ফিনিশ করছে।’ যদি দল ক্লিক করতে পারে তাহলে ১৬০-১৭০ রানকে ফাইটিং স্কোর বলেন মাহমুদ, ‘উইকেট কেমন হবে জানি না। আমি মনে করি টি-২০ ক্রিকেটে ১৬০-১৭০ রান ফাইটিং স্কোর। কার্যত আমাদের বোলিং ধারাবাহিকভাবে ভালো করছে। বিশেষ করে স্পিনার শেখ মেহেদি খুব ধারাবাহিক। পেস বোলিংয়ে মুস্তাফিজ, তাসকিন, তানজিম সাকিবরা ভালো করছেন।’

ফিল সিমন্স বাড়তি সময় দিচ্ছেন দুই সিম অলরাউন্ডার তানজিম সাকিব ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনকে। দুজনকে দিয়েই পাওয়ার হিটিং অনুশীলন করাচ্ছেন। খালেদ মাহমুদ নিজেও সন্তুষ্ট দুজনের পাওয়ার হিটিং ব্যাটিংয়ে। বিশেষ করে তানজিম সাকিবের পাওয়ার হিটিংয়ে সন্তুষ্টি ঝরেছে মাহমুদের কণ্ঠে,‘ তানজিম দারুণ বোলিং করে। তার বলে গতি আছে। বাউন্স আছে। তবে প্রয়োজনের সময় আক্রমণাত্মক মেজাজে ব্যাটিংটা দলের উপকারে লাগে। আমি মনে করি, ভবিষ্যতে একজন সিমিং অলরাউন্ডার হওয়ার সব কোয়ালিটি তার রয়েছে।’ এশিয়া কাপ শুরু ৯ সেপ্টেম্বর। ফাইনাল ২৮ সেপ্টেম্বর। এরপর আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিনটি করে টি-২০ ও ওয়ানডে ম্যাচের সিরিজ খেলবে। ম্যাচগুলোর তারিখ চূড়ান্ত হয়েছে। কিন্তু ভেন্যু এখনো ঠিক হয়নি। এশিয়া কাপ ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ খেলতে লিটন বাহিনী দেশ ছাড়বে ৬ সেপ্টেম্বর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top