এক ভরি সোনার দাম দুই লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে বেশ কয়েকদিন আগেই। বর্তমানে ২২ ক্যারেট সোনার ভরিপ্রতি দাম দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার ৩৩২ টাকা, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ফলে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের সোনার গয়না পরার শখ দিন দিন যেন ফিকে হয়ে যাচ্ছে।
তবে বিদেশফেরত যাত্রীদের জন্য সুখবর দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। নতুন ‘অপর্যটক যাত্রী ব্যাগেজ বিধিমালা ২০২৫’ অনুযায়ী, বিদেশ থেকে ১০০ গ্রাম সোনার অলংকার বছরে একবার শুল্ক ছাড়াই দেশে আনা যাবে। এর মানে, প্রায় ৮ ভরি ১০ আনা সোনা আনলেও কোনো কর দিতে হবে না।
একইসঙ্গে ২০০ গ্রাম রুপার গয়নাও শুল্কমুক্তভাবে আনা যাবে। তবে সোনা বা রুপা যেটিই হোক, একই ধরনের গয়না ১২ পিসের বেশি আনা যাবে না বলে জানিয়েছে এনবিআর।
এছাড়া যাত্রীরা প্রতি তোলায় ৫ হাজার টাকা শুল্ক দিয়ে বছরে একবার সর্বোচ্চ ১০ তোলা ওজনের একটি সোনার বার আনতে পারবেন।
কীভাবে আনতে হবে
বাংলাদেশে বিমানবন্দরে নামার পর যাত্রীদের ‘ব্যাগেজ ঘোষণা ফরম’ পূরণ করতে হয়। এতে নিজের নাম, পাসপোর্ট, ফ্লাইট নম্বর, আগমন দেশ এবং শুল্কযোগ্য পণ্যের বিবরণ দিতে হয়। তবে ১০০ গ্রাম সোনার অলংকার বা ২০০ গ্রাম রুপার অলংকারের কম থাকলে ফরম পূরণের প্রয়োজন নেই; যাত্রীরা সরাসরি গ্রিন চ্যানেল দিয়ে বের হয়ে যেতে পারবেন।
কেন বাড়ছে সোনার দাম
দেশে সোনা সরাসরি আমদানি না হওয়ায় বৈশ্বিক বাজারে দামের ওঠানামার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়ে। ব্যাগেজ রুলসের আওতায় আসা সোনাই এখন জোগানের অন্যতম উৎস হয়ে উঠেছে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় দেশে সোনার দাম ভরিপ্রতি কয়েক হাজার টাকা বেশি থাকে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, করোনা-পরবর্তী সময়ে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়াও সোনার দামে বড় প্রভাব ফেলেছে।
বৈশ্বিক পূর্বাভাস
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকস পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে প্রতি আউন্স সোনার দাম ৪,৯০০ ডলার ছাড়াতে পারে। অন্যদিকে ব্যাংক অব আমেরিকা গ্লোবাল রিসার্চ জানিয়েছে, আগামী বছরই এই দাম ৫,০০০ ডলার স্পর্শ করতে পারে।