বোরহানউদ্দিনে নারীদের আত্মরক্ষায় কারাতে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন

gsrdfgdsgfrgf.png
আনোয়ার হোসেন

সমাজে নারীর নিরাপত্তা নিয়ে যখন নানা প্রশ্ন উঠছে, তখন ভোলার বোরহানউদ্দিনে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ আত্মবিশ্বাসের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। ‘গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা (জিজেইউএস)’ সুইডিশ সরকার ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের অর্থায়ন ও সহযোগিতায় ‘কমিউনিটিভিত্তিক জলবায়ু সহনশীলতা ও নারীর ক্ষমতায়ন কর্মসূচি (সিআরইএ)’ প্রকল্পের আওতায় কিশোরী ও তরুণীদের জন্য আয়োজন করেছে আত্মরক্ষামূলক কারাতে প্রশিক্ষণের। ২ থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চলা এই ৩০ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণে ৩০ জন কিশোরী অংশ নিয়ে নিজেদের সুরক্ষার কৌশল রপ্ত করেছে।

সিআরইএ প্রকল্পের সমন্বয়কারী পুষ্টিবিদ বাবুল আখতার জানান, ‘এই প্রশিক্ষণ শুধুমাত্র শারীরিক কৌশল শেখাচ্ছে না, এটি মেয়েদের মানসিকভাবেও শক্তিশালী ও আত্মবিশ্বাসী করে তুলছে। আমাদের লক্ষ্য হলো, তারা যেন যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নিজেদের রক্ষা করতে পারে এবং সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে।’

প্রশিক্ষণার্থী শিলা, আফ্রীন, ফাবিয়া তাদের অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করে জানায়, কারাতে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা শারীরিক ও মানসিক শক্তি অর্জন করছে। প্রশিক্ষণার্থী মিঞ্জু বলেন, ‘আগে যেকোনো বিপদে ভয় পেতাম, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে নিজের ওপর আস্থা রাখতে পারব। এই প্রশিক্ষণ আমাদের সাহসী হতে শেখাচ্ছে।’

প্রশিক্ষক লোকমান হাওলাদার (ব্লাক বেল্ট) জানান, গত ২ আগস্ট থেকে শুরু হয়ে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চলা এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের সহজ কিন্তু অত্যন্ত কার্যকর আত্মরক্ষার কৌশল শেখানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে অপ্রত্যাশিত আক্রমণের মুখে আত্মরক্ষা, বিপদকালে মাথা ঠান্ডা রেখে পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং ভয়কে জয় করে দৃঢ় থাকা।

বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রায়হানউজ্জামান এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ‘নারীর ক্ষমতায়নের জন্য আত্মরক্ষা প্রশিক্ষণ অত্যন্ত জরুরি। এটি শুধু তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তাই নিশ্চিত করবে না, বরং সমাজের সামগ্রিক অগ্রগতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’

এই প্রশিক্ষণ কর্মশালা প্রমাণ করে যে, সঠিক দিকনির্দেশনা ও সুযোগ পেলে নারীরা নিজেদের যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম। এটি বোরহানউদ্দিনের কিশোরী ও তরুণীদের জন্য নতুন এক শুরুর গল্প, যেখানে প্রতিটি মেয়েই নিজের জীবনের চালক এবং আত্মবিশ্বাসের আলোয় তারা নিজেদের ভবিষ্যৎ রাঙিয়ে তুলছে। এই ধরনের উদ্যোগ দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন, যাতে প্রতিটি নারী নিজের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে নিরাপদ ও আত্মমর্যাদাশীল জীবনযাপন করতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top