ভুল চিকিৎসায় কারণে জীবন প্রদীপ নিভে গেল শিশু তানভীরের (৮)। শনিবার (২৩ আগস্ট) ভোর সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা মেডিকের হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে। শিশু তানভিবের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার ফুল কাচিয়া গ্রামে। তানভীরের মৃত্যুর খবরে তার গ্রামের বাড়িতে মা, স্বজনসহ সবাই কান্নায় ভেঙে পড়েন। শনিবার বিকালে ভোলা সদর হাসপাতালে পোস্টমর্টেম শেষে রাতে তার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় দাফন করার জন্য এবং রাতেই তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
জানা গেছে, চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল জ্বরে আক্রান্ত ৮ বছরের শিশু মো: তানভীরকে তার পরিবারের স্বজনরা চিকিৎসার জন্য বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। হাসপাতালের গেইট থেকে আকিব মেডিকেল হলের মালিক মো: আকিব উল্লাহর প্ররোচনায় তার ফার্মেসীতে নিয়ে ডাক্তার পরিচয় দেওয়া স্যাকমো মো: সফিকুল ইসলামকে দেখান। তিনি বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে ডেঙ্গু আক্রান্তের কথা বলে রোগীকে ৪টি ইনজেকশন পুশ করেন। ইনজেকশন পুশের পর পরই শিশু তানভীরের হাতে কালো বিচির মতো উঠতে থাকে। এক পর্যায়ে তার হাত-পায়ে পচন দেখা দিলে ক্রমেই তা ভয়াবহ রুপ নেয়। প্রায় ৪ মাস ধরে ভোলা, বরিশাল, ঢাকা, শিশু হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল চিকিৎসারত অবস্থায় তানভীর মারা যান।
আরো জানা গেছে, ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে দরিদ্র পরিবার তাদের বসতভিটিসহ সব বিক্রি করে ১৭ লাখ টাকা খরচ করেন। স্যাকমো শফিকুল ইসলাম নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে প্রাইভেট চেম্বারে রোগীর ভুল চিকিৎসা দেওয়ার অভিযোগে শিশু তানভীরের মা মোসা: মিতু গত ১৫ জুলাই সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। ওই মামলায় শফিকুলকে গ্রেফতার করা হয়, বর্তমানে শফিক জেল হাজতে রয়েছেন।
মামলায় আরও দাবি করা হয়েছে, অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম ডাক্তার না হয়েও ডাক্তার পরিচয়ে ব্যবস্থাপত্রে ভুল চিকিৎসা দিয়েছেন। ব্যবস্থাপত্রে শিশুর ডেঙ্গু হয়েছে উল্লেখ করা হলেও তার ডেঙ্গু হয়নি। মামলার অপর আসামি ফার্মেসী মালিক মো: আকিব উল্লাহ এখনও গ্রেফতার হয়নি। শিশু তানভিরের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার ফুল কাচিয়া গ্রামে। সে চরমোনাই মাদরাসার হেফজ বিভাগে পড়াশোনা করত।