ভোলায় শিশুদের মক্তব দখল করে বিএনপির কার্যালয়, তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন

bhola-bnp-dokhol-web.jpg
আনোয়ার হোসেন

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় শিশুদের ধর্মীয় শিক্ষা কেন্দ্র (মক্তব) দখল করে রাজনৈতিক কার্যালয় হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের কয়েকজন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চর কুকরি-মুকরি ইউনিয়নের আমিনপুর গ্রামে

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আমিনপুর গ্রামের বাজারসংলগ্ন কাকরাইল জামে মসজিদের পাশে প্রায় ১০ বছর আগে ইউএনডিপি ও মুসলিম এইডের সহায়তায় একটি মক্তব ঘর নির্মাণ করা হয়। মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিন দীর্ঘদিন ধরে শিশু-কিশোরদের কোরআন শিক্ষা দেওয়ার জন্য ঘরটি ব্যবহার করে আসছিলেন।

রাজনৈতিক দখলের অভিযোগ

স্থানীয়রা জানান, গত বছর আগস্টে আওয়ামী সরকারের পতনের পর স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা সোহরাব রাঢ়ী, বনি আমিন দালাল, জাকির রাঢ়ী, জাকির হাওলাদার, বাবুল মুন্সী, ইসমাইল সিকদার প্রমুখ ঘরটি দখল করে রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করেন।

মসজিদ কমিটির সভাপতি আবু তাহের বলেন,

“ঘরটি শিশুদের ধর্মীয় শিক্ষার জন্য খুব প্রয়োজনীয় ছিল। কিছুদিন আগে কয়েকজন এসে দখল করে নেয়। এখন আমরা বাধ্য হয়ে মসজিদের ভেতরে সকালে পাঠদান চালাচ্ছি। চাই, মক্তবটি আবার শিশুদের জন্য উন্মুক্ত করা হোক।”

স্থানীয় কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,

“এটি সরকারি সহায়তায় নির্মিত ধর্মীয় শিক্ষা কেন্দ্র। রাজনৈতিক স্বার্থে এমন জায়গা দখল করা অনৈতিক এবং ধর্মীয় অবমাননার শামিল।”

বিএনপি নেতাদের পাল্টা বক্তব্য

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে চর কুকরি-মুকরি ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি বশির আহম্মেদ বলেন,

“ঘরটি আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে দখল করে রেখেছিল। স্থানীয় বিএনপি কর্মীরা শুধু সেটি পরিষ্কার করে রাজনৈতিক বৈঠক করতেন। দখলের অভিযোগ সঠিক নয়।”

ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি সামছুল হক বলেন,

“বিষয়টি জানার পর আমি দলীয় নেতা-কর্মীদের ঘরটি ছেড়ে দিতে বলেছি। এখন সেখানে কেউ বসে না, শুধু কয়েকটি চেয়ার ও বিএনপি নেতাদের ছবি রয়ে গেছে। আশা করি, শিগগিরই মক্তব আবার চালু হবে।”

প্রশাসনের তদন্ত

চরফ্যাশন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এমাদুল হোসেন বলেন,

“ঘটনাটি জেনে দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top