রাজশাহীতে এক নারীর মরদেহ পুড়িয়ে বিকৃত করা হয়েছিল, এমনকি হাতের আঙুলও পুড়িয়ে দেওয়া হয় যাতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট শনাক্ত করা না যায়। লাশ পচে গেলেও শেষ পর্যন্ত কোমরে থাকা একগোছা চাবি দিয়েই তাঁর পরিচয় নিশ্চিত হয়।
নিহত নারী (৪৩) রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটার একটি খাবার হোটেলের কর্মচারী ছিলেন। তিনি ১৫ অক্টোবর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। গত শনিবার (১৮ অক্টোবর) পবা উপজেলার বাগসারা গ্রামের একটি ধানখেত থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
তিনজন গ্রেপ্তার
ঘটনার পর পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা হলেন—
-
তারা মিয়া (৩৩), বাগসারা গ্রামের আবদুল বারেকের ছেলে
-
ফারুক হোসেন (৩০), মহানন্দাখালীর ইছুল মণ্ডলের ছেলে
-
হেলাল উদ্দিন (২৩), একই এলাকার এন্তাজ আলীর ছেলে
গ্রেপ্তার তারা মিয়া আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
হত্যার কারণ
রাজশাহী মহানগর পুলিশের শাহ মখদুম জোনের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার সাবিনা ইয়াসমিন জানান, নিহত নারী টাকার বিনিময়ে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত ছিলেন। পাঁচ হাজার টাকা বিনিময়ে চুক্তি হয়, কিন্তু পরে টাকা পরিশোধ না করায় পরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করা হয়।
লাশ ধানখেতে ফেলে দেওয়া হয় এবং পুড়িয়ে বিকৃত করা হয় যাতে পরিচয় গোপন থাকে।
চাবিতেই শনাক্ত
নিহত নারীর ছেলে (২৫) জানান, ১৫ বছর আগে তাঁর মা-বাবার বিবাহবিচ্ছেদ হয়। মা স্থানীয় একটি হোটেলে কাজ করতেন এবং দুই বছর আগে দ্বিতীয় বিয়ে করেন।
১৮ অক্টোবর সৎবাবার কাছ থেকে মায়ের ফোন বন্ধ থাকার খবর পান তিনি। পরে বাসায় গিয়ে ঘর তালাবদ্ধ দেখতে পান। স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারেন, কয়েক দিন ধরে ঘরটি বন্ধ। পরে জানতে পারেন, বাগসারায় এক অজ্ঞাতপরিচয় নারীর লাশ উদ্ধার হয়েছে।
লাশের কোমরে থাকা চাবির গোছা দিয়ে ঘরের তালা খোলার পর তিনি নিশ্চিত হন— নিহত নারী তাঁর মা।
পুলিশের মন্তব্য
অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার সাবিনা ইয়াসমিন বলেন,
“দুষ্কৃতকারীরা লাশ পুড়িয়ে বিকৃত করেছিল। সম্ভবত ক্রাইম পেট্রলের মতো সিরিজ দেখে তারা জানত, হাতের আঙুল পুড়িয়ে দিলে ফিঙ্গারপ্রিন্ট শনাক্ত করা যায় না। চার দিনে লাশ পচে যায়, তবু কোমরের চাবি দিয়েই পরিচয় নিশ্চিত হয়।”