কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান সিনেট সভাপতি হুন সেন অভিযোগ করেছেন, থাইল্যান্ড সীমান্ত এলাকায় লাউডস্পিকারে ‘ভূতের মতো আওয়াজ’ বাজিয়ে মানসিক যুদ্ধ চালাচ্ছে।
শনিবার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে হুন সেন জানান, কম্বোডিয়ার মানবাধিকার কমিশন এই ঘটনায় জাতিসংঘে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানিয়েছে। অভিযোগের চিঠি পাঠানো হয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্কের কাছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সীমান্তবর্তী কয়েকটি গ্রামে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন—থাই সেনারা রাতভর উচ্চ-মাত্রার ভয়ঙ্কর শব্দ বাজাচ্ছে, যা কখনও “ভূতের আর্তনাদ” আবার কখনও “বিমান ইঞ্জিনের গর্জন”-এর মতো শোনায়।
কমিশনের দাবি, এই ভয়ঙ্কর শব্দে সীমান্তের মানুষের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটছে, মানসিক অস্থিরতা ও শারীরিক অস্বস্তি বাড়ছে। তারা আশঙ্কা করছে, এই কর্মকাণ্ড দুই দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।
থাই সরকার এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
হুন সেন জানিয়েছেন, বিষয়টি মালয়েশিয়ার সঙ্গেও আলোচনা করা হয়েছে। মালয়েশিয়াই গত জুলাইয়ে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সীমান্ত সংঘাত থামাতে মধ্যস্থতা করেছিল। ওই সময় দুই দেশ তাৎক্ষণিক ও নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়, যা এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষের অবসান ঘটায়।
সেই সংঘাতে অন্তত ৩৮ জন নিহত ও তিন লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। সংঘর্ষের সময় উভয় দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কও চরম উত্তেজনায় ছিল—কম্বোডিয়া থাই চলচ্চিত্র ও ফল আমদানি বন্ধ করে দেয়, আর এক থাই বিক্ষোভকারী হুন সেনের প্রতিকৃতিতে মাছের সস নিক্ষেপ করেন।
শেষ পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প উভয় দেশকে ফোন করে সতর্ক করেন যে যুদ্ধ না থামালে বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত থাকবে। ধারণা করা হচ্ছে, এই মাসের শেষে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে ট্রাম্প দুই দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিক শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের তদারকি করবেন।
এদিকে, থাইল্যান্ড অভিযোগ করেছে যে কম্বোডিয়া সীমান্তে নতুন করে স্থলমাইন পুঁতছে। এসব বিস্ফোরণে অন্তত ছয় থাই সেনা আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স। তবে কম্বোডিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, থাই সেনারা তাদের গৃহযুদ্ধকালে পোঁতা পুরনো মাইনের ওপর পা দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গৃহযুদ্ধের উত্তরাধিকারেই কম্বোডিয়া এখনও বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মাইনদূষিত দেশগুলোর একটি।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, এনডিটিভি