হঠাৎ গান ছাড়ার ঘোষণা দিলেন তাহসান, জানালেন কারণ

prothomalo-bangla_2024-07_9125548a-7823-4738-9088-a93132cad2f9_tahsan.avif
আনোয়ার হোসেন

বাংলাদেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী, গীতিকার ও অভিনেতা তাহসান খান। আড়াই দশক ধরে সংগীতের মঞ্চ মাতিয়েছেন তিনি। তাঁর ফেসবুক পেজে অনুসারীর সংখ্যা ছিল প্রায় এক কোটি, ইনস্টাগ্রামে ৩৫ লাখের বেশি। কিন্তু হঠাৎই দেখা যাচ্ছে, তাঁর ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট নেই। বন্ধ রয়েছে দুটি অ্যাকাউন্টই। এ নিয়ে তিনি ভক্তদের কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা দেননি।

এদিকে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত এক কনসার্টে ভক্ত–শ্রোতারা পেলেন আরেকটি অপ্রত্যাশিত খবর। গতকাল গাইতে গাইতে হঠাৎ মাইক্রোফোনে ঘোষণা করলেন, ‘অনেক জায়গায় লেখা হচ্ছে, এটা আমার শেষ কনসার্ট। শেষ কনসার্ট না, শেষ ট্যুর। আস্তে আস্তে সংগীতজীবনের হয়তো ইতি টানব। এটা ন্যাচারাল। সারাজীবন কি এভাবে মঞ্চে দাঁড়িয়ে লাফালাফি করা যায়! মেয়ে বড় হয়ে যাচ্ছে, এখন যদি মঞ্চে দাঁড়িয়ে গাই—“দূরে তুমি দাঁড়িয়ে”—দেখতে কেমন লাগে।’

সিডনিতে গাইছেন তাহসান
সিডনিতে গাইছেন তাহসান

এই ঘোষণা শুনে উপস্থিত দর্শকেরা হতভম্ব হয়ে পড়েন। হলজুড়ে শোনা যায় একসঙ্গে না–না ধ্বনি। অনেকেই তখনই চোখের জল মুছতে থাকেন। কিন্তু তাহসান নিজের সিদ্ধান্তে অটল থেকে গান চালিয়ে যান। পরের দিন সোমবার দুপুরে তাহসানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি সংক্ষেপে বলেন, ‘একটা সাধারণ জীবনের আশায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

পেশাদার সংগীতে ২৫ বছর পার করছেন তাহসান। এই রজতজয়ন্তী উপলক্ষে তিনি বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া ট্যুরে রয়েছেন। ব্রিসবেন, অ্যাডিলেড ও সিডনির কনসার্টগুলোতে হাজারো দর্শককে মুগ্ধ করেছেন তিনি। দর্শক–শ্রোতাদের সঙ্গে গলা মিলিয়ে গেয়েছেন তাঁর গাওয়া জনপ্রিয় সব গান। প্রতিটি শহরে দর্শকদের ভিড় প্রমাণ করেছে, তাহসানের জনপ্রিয়তা এখনো অটুট।

সিডনিতে সুরের মূর্ছনায় মাতালেন নকীব-তাহসান

কিন্তু মেলবোর্নের কনসার্টে আনন্দের পাশাপাশি এই ঘোষণা ভক্তদের মন ভারী করেছে। পার্থ শহরে রয়েছে তাঁর শেষ কনসার্ট। এরপর তিনি ধীরে ধীরে সরে দাঁড়াবেন বলেই ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাহসান বহুবার বলেছেন, ‘তাঁর কাছে মিউজিক সব সময় আবেগের জায়গা। তবে বয়স, সময় ও জীবনের অগ্রাধিকার তাঁকে নতুন করে ভাবিয়েছে। মেয়ের বড় হয়ে ওঠা তাঁর জীবনের বড় প্রভাব ফেলেছে। মঞ্চে লাফিয়ে গান গাওয়া আর তাঁর কাছে আগের মতো স্বাভাবিক মনে হয় না। শিল্পী হিসেবে নয়, একজন বাবা হিসেবে তাঁর দায়িত্বও বেড়েছে।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সরে দাঁড়ানো এবং এই সিদ্ধান্ত—দুটিই যেন ইঙ্গিত করছে, তাহসান এখন নিজের ব্যক্তিগত সময়কে প্রাধান্য দিতে চান। বাংলা রক গানে জোয়ার এনেছিল ব্যান্ড ‘ব্ল্যাক’। ১৯৯৮ সালে তিন বন্ধু জন কবির, জাহান ও টনির হাত ধরে যাত্রা শুরু হয় এ ব্যান্ডের। পরে এই ব্যান্ডে যোগ দেন তাহসান ও মিরাজ। ২০০২ সালে বাজারে আসে ব্যান্ডটির প্রথম অ্যালবাম ‘আমার পৃথিবী’। অ্যালবামের গানগুলো ব্যাপক সাড়া ফেলে দেশের তরুণ শ্রোতাদের মধ্যে।

তাহসান খান
তাহসান খানছবি: শিল্পীর সৌজন্যে

তাহসানের এই ঘোষণা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা তৈরি করেছে। অনেকে লিখেছেন, ‘আমরা প্রস্তুত নই তাঁকে বিদায় জানানোর জন্য।’ কেউ কেউ আশা প্রকাশ করেছেন, কিছুদিন বিরতি নিয়ে তিনি আবার ফিরে আসবেন। কিন্তু তাহসান প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, গানে ফেরার সম্ভাবনা নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top