গাজায় সাধারণ ফিলিস্তিনি নাগরিকদের ওপর হামাসের সম্ভাব্য হামলার শঙ্কা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, তাদের কাছে এ বিষয়ে বিশ্বস্ত সূত্রের তথ্য রয়েছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এমন হামলা হলে তা হবে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তির মারাত্মক লঙ্ঘন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সম্ভাব্য এ হামলা হলে দুই বছরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বন্ধে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় সম্পন্ন হওয়া চুক্তি হুমকির মুখে পড়তে পারে। তবে হামলার সময়, স্থান বা কৌশল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কোনো বিস্তারিত তথ্য জানায়নি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর আরও জানিয়েছে, হামাস যদি হামলা চালায়, তবে গাজার সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ও যুদ্ধবিরতি রক্ষায় তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার শুরু হতেই নতুন উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। কয়েক দিন আগে একটি ভিডিওতে হামাসের পট্টি পরিহিত সশস্ত্র ব্যক্তিদের আটজনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার দৃশ্য দেখা যায়। ওই ঘটনার পরই যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ বাড়ে।
ঘটনার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সতর্কবার্তা দেন। তিনি বলেন,
“হামাস যদি গাজায় মানুষ হত্যা অব্যাহত রাখে বা চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে, তাহলে তাদের শেষ করে দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।”
তবে পরে তিনি স্পষ্ট করে জানান, গাজায় মার্কিন সেনা পাঠানো হবে না, তার হুঁশিয়ারি ছিল শুধু রাজনৈতিক বার্তা।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ আলোচনার পর গাজায় গত ১১ অক্টোবর থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। শর্ত অনুযায়ী, হামাস মৃত ২৮ ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করতে রাজি হয়, যার মধ্যে এখন পর্যন্ত ১০ জনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মহল এই যুদ্ধবিরতিকে গুরুত্বপূর্ণ মানবিক অগ্রগতি হিসেবে দেখছে।
এদিকে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় কমপক্ষে ৬৭ হাজার ৯৬৭ জন নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজার ১৭৯ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। নিহতদের অধিকাংশই ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিক বলে জানিয়েছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা।
তথ্যসূত্র: এপি, বিবিসি