হ্যাটট্রিক সিরিজ বাংলাদেশের

1756748393-715eb50e1f8565b79af60cff44e3f9bb.jpg
আনোয়ার হোসেন

ইনিংসের ১৪তম ওভারের প্রথম বলে স্ট্রেইট চার মারেন তানজিদ হাসান তামিম। ওই চারে ৪১ বল হাতে রেখে ৯ উইকেটের বড় জয় পায় বাংলাদেশ। এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ নিশ্চিত করে টাইগাররা। আগামীকাল একই ভেন্যুতে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ। লিটন বাহিনী পারবে কি হোয়াইটওয়াশ করতে? নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে এই প্রথম টি-২০ সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। ২০১২ সালে দুই দেশ প্রথমবার টি-২০ সিরিজ খেলেছিল। ১-১ ব্যবধানে ড্র হয়েছিল সিরিজটি। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে বাংলাদেশের এটা সবচেয়ে বড় জয়। টি-২০ এশিয়া কাপে ৬ সেপ্টেম্বর টাইগাররা খেলতে যাবেন টানা তিন সিরিজ জিতে। নেদারল্যান্ডসের আগে লিটন বাহিনী হারিয়েছে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাকে।

দুই ওপেনার তানজিদ ও পারভেজ হোসেন ইমন প্রতিটি ম্যাচে দুজনে দারুণ খেলছেন। কিন্তু ইনিংসগুলোকে লম্বা করতে পারছেন না। বড় কোনো জুটি গড়তে পারছেন না। সিরিজের প্রথম ম্যাচে দুই ওপেনার ২.৪ ওভারে ২৫ রানের জুটি গড়েন। গতকাল ৪০ রানের জুটি গড়েন ৫.৩ ওভারে। পারভেজ আউট হন ২১ বলে ২৩ রানে। তানজিদ খেলেন হাফ সেঞ্চুরির ইনিংস। ৩১ ম্যাচে যা ষষ্ঠ হাফ সেঞ্চুরি। ম্যাচ জেতানো বাউন্ডারি মেরে গতকাল অপরাজিত থাকেন ৫৪ রানে। ৪০ বলের ইনিংসটিতে ছিল ৪টি চার ও ২টি ছক্কা। অধিনায়ক লিটন দাস অপরাজিত থাকেন ১৮ বলে ২ চারে ১৮ রানে। প্রথম ম্যাচে টাইগার অধিনায়ক খেলেছিলেন ২৯ বলে ৫৪ রানের অপরাজিত ইনিংস। ৪০ রানে প্রথম উইকেটের পতনের পর তানজিদ ও লিটন দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে অবিচ্ছিন্ন থেকে যোগ করেন ৪৬ বলে ৬৪ রান।

একাদশে দুই পরিবর্তন নিয়ে খেলে টাইগাররা। প্রথম ম্যাচে খেলেছিলেন বাঁ হাতি পেসার শরিফুল ইসলাম ও লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। ৮ উইকেটের সহজ জয়ের ম্যাচে পারফরম্যান্স আহামড়ি ছিল না দুজনের। দুজনকে সাজঘরে বসিয়ে ডান হাতি পেসার তানজিম সাকিব ও বাঁ হাতি স্পিনার নাসুম আহমেদকে নিয়ে খেলেছেন টাইগাররা। তাসকিন আহমেদ, তানজিম, শেখ মেহেদি হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান ও নাসুমের সাঁড়াশি আক্রমণে সফরকারী নেদারল্যান্ডস ১৭.৩ ওভারে মাত্র ১০৩ রান করে। যা বাংলাদেশের বিপক্ষে নেদারল্যান্ডসের সর্বনিম্ন স্কোর। দলটির আগের সর্বনিম্ন স্কোর ছিল ৯ উইকেটে ১৩১। ২০১২ সালে দ্য হেগে করেছিল। সব মিলিয়ে দলটির সর্বনিম্ন স্কোর ৩৯, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০১৪ সালে চট্টগ্রামে। সিলেটে দ্বিতীয় ম্যাচে ৫ টাইগার স্পেশালিস্ট বোলার এতটাই মিতব্যয়ী ছিলেন যে, ডট বল নিয়েছেন ৫৩টি। চার খেলেছেন ৯টি এবং ছক্কা মাত্র একটি। প্রথম ম্যাচে টাইগার বোলাররা ডট নিয়েছিলেন ৫১টি। চার খেলেছিলেন ১২টি এবং ছক্কা ৩টি।

সিরিজ নিশ্চিতের ম্যাচে টস জিতে লিটন। ফিল্ডিং নেন। আগের ম্যাচের মতো এবারও বোলিং করেন অফ স্পিনার শেখ মেহেদি। এবার নিয়ে টি-২০ ক্রিকেটে বাংলাদেশের পক্ষে ২৫ বার বোলিং ওপেন করেন মেহেদি। সবচেয়ে বেশি ৩৪ বার বোলিং করেন সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। ৩১ বার করেন তাসকিন আহেমদ। মেহেদি এক উইকেটও নেন। সিরিজে প্রথমবার খেলতে নেমে দারুণ বোলিং করেন দীর্ঘদেহি বাঁ হাতি স্পিনার নাসুম। ইনিংসের তৃতীয় ও নিজের প্রথম ওভারেই আঘাত হানে সফরকারীদের ইনিংসে। টানা ২ উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের আশা জাগিয়ে তোলেন। শেষ পর্যন্ত হ্যাটট্রিক না হলেও দারুণ বোলিং করেন। ম্যাচসেরা নাসুমের স্পেল ৪-০-২১-৩। ২টি করে উইকেট নেন তাসকিন ও মুস্তাফিজ। মুস্তাফিজ ২ উইকেট নেন ১৮ রানের খরচে। বাঁ হাতি পেসারের উইকেট সংখ্যা এখন ১৪২। টি-২০ ক্রিকেট ইতিহাসে পঞ্চম সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তিনি। টিম সাউদি সবার ওপরে। ১২৬ ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন ১৬৪টি। আফগানিস্তানের অধিনায়ক রশিদ খান ৯৭ ম্যাচে ১৬২টি, নিউজিল্যান্ডের আইএস সোধি ১২৬ ম্যাচে ১৫০টি এবং বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান চার নম্বরে। বাঁ হাতি স্পিনার ১২৯ ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন ১৪৯টি। মুস্তাফিজের উইকেট ১১৩ ম্যাচে ১৪২টি।

 

স্কোর :

নেদারল্যান্ডস : ১০৩/১০, ১৭.৩ ওভার (ও’ডাউড ৮, ভিক্রামজিৎ ২৪, শারিজ ১২, আরিয়ান ৩০, ফন মিকেরেন ৩, ডোরাম ২*; তাসকিন ৪-০-২২-২, নাসুম ৪-০-২১-৩, তানজিম ৩-০-১৬-১, মুস্তাফিজ ৩-০-১৮-২)।

বাংলাদেশ : ১০৪/১, ১৩.১ ওভার (পারভেজ ২৩, তানজিদ ৫৪*, লিটন ১৮*; আরিয়ান ৪-০-১৪-০, ক্লেইন ২.১-০-২০-১, ফন মিকেরেন ৩-০-২৮-০, ডোরাম ২-০-১৩-০, ও’ডাউড ২-০-২৬-০)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top