বার্সেলোনার জার্সিতে লা লিগায় অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা রাশফোর্ড ইয়ামালের খেলা দেখে এতটাই মুগ্ধ যে, তাঁর মধ্যে রোনালদোকে খুঁজে পাচ্ছেন।
লা লিগার গত মৌসুম যেভাবে শেষ করেছিল, নতুন মৌসুম সেভাবেই শুরু করেছে বার্সেলোনা। স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নরা নিজেদের প্রথম ম্যাচে মায়োর্কাকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে।
বার্সার তরুণ বিস্ময় লামিনে ইয়ামালও গত মৌসুমের ছন্দটা ধরে রেখেছেন। ম্যাচের যোগ করা সময়ে বাঁ পাশের কোণ দিয়ে বাঁকানো শটে করেছেন তাঁর ‘ট্রেডমার্ক’ গোল। এ ম্যাচ দিয়েই লা লিগায় অভিষেক হয়েছে মার্কাস রাশফোর্ডের। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে ধারে আসা রাশফোর্ডই গ্যারি লিনেকারের প্রথম ইংলিশ ফুটবলার, যিনি বার্সার হয়ে খেলছেন।
ম্যাচের ৬৯ মিনিটে ফেরান তোরেসের বদলি নামেন রাশফোর্ড। কাতালান ক্লাবটির হয়ে প্রথম প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ম্যাচে ২৫ মিনিটের মতো খেলার সুযোগ হয়েছে তাঁর। ইয়ামালের গোলটাও খুব কাছ থেকে দেখেছেন।
লা লিগায় সম্প্রতি মার্কাস রাশফোর্ডের (মাঝে) অভিষেক হয়েছে
ইয়ামালের খেলায় মুগ্ধ রাশফোর্ডের মনে হচ্ছে, তাঁর বয়সী প্রতিভাবান ফুটবলার বর্তমানে কেউ নেই। শুধু ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোনালদো নাজারিও এই বয়সে এতটা তুখোড় ছিলেন।
গত জুলাইয়ে ১৮ বছর পূর্ণ হওয়া ইয়ামালকে নিয়ে রাশফোর্ড স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক স্পোর্তকে বলেন, ‘ওর বয়সী যতজনের সঙ্গে খেলেছি, তাদের মধ্যে সে-ই সবচেয়ে প্রতিভাবান। খেলার ওপর তার প্রভাব অবিশ্বাস্য। হয়তো শুধু রোনালদো নাজারিওর কথা বলা যায়। এত অল্প বয়সে ধারাবাহিকভাবে মাঠে প্রভাব বিস্তার করা সত্যিই অবিশ্বাস্য ব্যাপার। ওর সামনে লম্বা ক্যারিয়ার পড়ে আছে। আমার আশা, সে তার খেলার মান বজায় রাখবে এবং আরও উন্নতি করবে।’
২৭ বছর বয়সী রাশফোর্ড আরও বলেন, ‘সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো সে তার বয়সের তুলনায় কতটা পরিণত, কীভাবে ভাবে এবং খেলে। দেখে মনে হয় যেন অনেক অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। ওর সঙ্গে খেলতে পারার অভিজ্ঞতা বেশ রোমাঞ্চকর।’
শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলে এত অল্প বয়সেই ইয়ামালের নজরকাড়া পারফরম্যান্স দেখে কেউ কেউ তাঁকে বার্সার সর্বকালের সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসির সঙ্গে তুলনা করেন।
লা লিগা ও চ্যাম্পিয়নস লিগ মিলিয়ে ইয়ামাল এখন পর্যন্ত ৯৭ ম্যাচ খেলে ৪৪ গোলে অবদান (২০ গোল, ২৪ অ্যাসিস্ট) রেখেছেন। রেকর্ড আটবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী মেসি এই দুই প্রতিযোগিতা মিলিয়ে নিজের প্রথম ৯৭ ম্যাচে ৫২ গোলে অবদান (৪০ গোল ও ১২ অ্যাসিস্ট) রেখেছিলেন।
রোনালদো নাজারিও বার্সার হয়ে মাত্র এক মৌসুম (১৯৯৬-৯৭) খেলেছেন। ৪৯ ম্যাচেই করেছেন ৪৭ গোল। সেই পারফরম্যান্স তাঁকে ১৯৯৭ সালে ব্যালন ডি’অর এনে দেয়। ২০০২ সালে তিনি আরেকবার ব্যালন ডি’অর জেতেন ব্রাজিলকে পঞ্চম বিশ্বকাপ এনে দিতে বড় অবদান রেখে।
২০২৪-২৫ মৌসুমে ইয়ামালও ছিলেন এক কথায় দুর্দান্ত। বার্সাকে ঘরোয়া ট্রেবল (লা লিগা, কোপা দেল রে, স্প্যানিশ সুপার কাপ) জেতাতে অবদান রাখার পাশাপাশি ছয় বছর পর উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে তুলতেও সহায়তা করেছেন।
রাশফোর্ড মনে করেন, ইয়ামালও একদিন ব্যালন ডি’অর জিতবেন, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই সে (ব্যালন ডি’অর) জিততে পারে। যদি এই বছর না–ও জেতে, ভবিষ্যতে জিতবে। দেম্বেলে, রাফিনিয়ারও এটা প্রাপ্য। ওরাও দারুণ মৌসুম কাটিয়েছে। তাই নির্দিষ্ট করে একজনের নাম বলা কঠিন। তবে ইয়ামাল এতটাই প্রতিভাবান যে একদিন ওর হাতে পুরস্কারটা উঠেবেই।’