🌳 মনপুরায় অবৈধ স-মিলের দৌরাত্ম্য! প্রশাসনের চোখের সামনে চলছে গাছ কাটার মহোৎসব

ভোলার মনপুরা উপজেলায় সরকারি অনুমোদন ছাড়াই গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ স-মিল। কোনো ধরনের নিয়মনীতি মানা ছাড়াই এসব করাতকল প্রতিদিন কেটে ফেলছে বনজ, ফলদসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। দিন-রাত চলমান এসব স-মিল শুধু পরিবেশের জন্যই নয়, আশপাশের বাসিন্দাদের জীবনযাত্রায়ও চরম ভোগান্তি তৈরি করছে।

বহু অভিযোগ সত্ত্বেও অবৈধ স-মিল মালিকদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

📍 সরেজমিন চিত্র

উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে প্রায় ৫০টিরও বেশি স-মিল রয়েছে—যার অধিকাংশই লাইসেন্সবিহীনভাবে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা চালিয়ে আসছে। সরকারের নির্ধারিত বিধি-বিধান থাকলেও বাস্তবে তার কোনো প্রয়োগ নেই। প্রশাসনের ‘দেখেও না দেখার’ মনোভাবের সুযোগে স-মিল মালিকরা নির্বিঘ্নে পরিচালনা করছে তাদের ব্যবসা।

অনেক স-মিল সড়কের একদম পাশে স্থাপন করা হয়েছে, যেখানে হাজারো কাটা গাছের গুঁড়ি পড়ে থাকে দীর্ঘদিন। এতে সড়কের বড় অংশ দখল হয়ে যাওয়ায় পথচারীদের ঝুঁকি নিয়ে মূল সড়কে হাঁটতে হয়, ফলে ঘনঘন দুর্ঘটনাও ঘটছে।

⚖️ আইন আছে, প্রয়োগ নেই

নিয়ম অনুযায়ী—

• সরকারি অফিস, স্কুল, হাসপাতাল, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বা জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানের ২০০ মিটারের মধ্যে স-মিল স্থাপন করা নিষিদ্ধ।

• সরকারি বনভূমির সীমানা থেকে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে স-মিল স্থাপন করা যাবে না।

• সকাল ৬টার আগে ও সন্ধ্যা ৬টার পর স-মিল চালানো যাবে না।

• নির্ধারিত ফি প্রদান করে লাইসেন্স গ্রহণ বাধ্যতামূলক।

কিন্তু মনপুরায় এসব আইন-বিধিনিষেধের কোনোটিই মানা হচ্ছে না। একাংশ স-মিল মালিক অবৈধভাবে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।

🗣️ স্থানীয়দের অভিযোগ ও প্রতিক্রিয়া

৩ নং উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকার স-মিল মালিক শরিফ পাটোয়ারী দাবি করেন,

“আমার স-মিলের ট্রেড লাইসেন্স আছে, আমরা অবৈধ গাছ কাটিনা।”

অন্যদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স-মিল মালিক বলেন,

“লাইসেন্স ছাড়াই তো চলছে। তাই লাইসেন্স করার দরকার কী! আবার করলে অনেক ঝামেলা।”

⚠️ পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব

স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, এসব স-মিল থেকে অনিয়ন্ত্রিত গাছ কাটা দ্বীপের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠবে।
তাদের দাবি—অবিলম্বে সব অবৈধ স-মিল অপসারণ, সঠিক তদারকি নিশ্চিত করা এবং সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনা হোক।