দারুণ ছন্দে আছে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দল। সর্বশেষ ঘরের মাঠে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ২-০–তে টি–টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে। ডাচদের বিপক্ষে সিরিজ জয়ে বাংলাদেশকে যদি খুব বেশ কৃতিত্ব না দিতে চান, তাহলে বলে রাখতে হচ্ছে এই সিরিজের আগে বাংলাদেশ সিরিজ জিতেছে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।
এমন ছন্দে থাকা বাংলাদেশের পরের মিশন টি-টোয়েন্টি সংস্করণের এশিয়া কাপ। ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ও ক্রিকেট বিশ্লেষক আকাশ চোপড়া মনে করেন, ছন্দ বাংলাদেশের পক্ষে থাকলেও এশিয়া কাপে বাংলাদেশ গ্রুপ পর্ব থেকেই ছিটকে যেতে পারে।
এশিয়া কাপে বাংলাদেশ খেলবে ‘বি’ গ্রুপে। একই গ্রুপে আছে আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও হংকং। গ্রুপে চার দল থেকে সেরা দুই দল যাবে সুপার ফোরে। চোপড়া মনে করেন, ‘বি’ গ্রুপ থেকে বাংলাদেশ নয়, সুপার ফোরে যাওয়ার জন্য ফেবারিট আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে বাংলাদেশ দলের শক্তি ও দুর্বলতা নিয়ে আলোচনায় এমন মতামত দিয়েছেন চোপড়া।
ভারতের এই সাবেক ক্রিকেটার ও বিশ্লেষকের মতে, লিটন দাসের দলের সবচেয়ে বড় শক্তি পেস বিভাগ। চোপড়া বলেছেন, ‘বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ফর্ম ভালো। তারা আসলে দারুণ ক্রিকেট খেলছে। ঘরে ও বাইরে দুই জায়গাতেই ভালো খেলছে। বাংলাদেশের পেস বোলিং ইউনিট ভালো। তাসকিন, তানজিম নতুন বলে ভালো বোলিং করতে পারে। মোস্তাফিজ তো নতুন ও পুরোনো দুই বলেই ভালো করতে পারে। সব মিলিয়ে ভালো একটা পেস বোলিং ইউনিট, সঙ্গে অভিজ্ঞও। ফাস্ট বোলিং বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গা। স্পিনেও বৈচিত্র্য আছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের বোলিং লাইনআপকে শক্তির জায়গা হিসেবে ধরা যেতে পারে।’

নেদারল্যান্ডস সিরিজে তিন ইনিংসে দুটিতে ফিফটি পান লিটন। হয়েছেন সিরিজের সেরা খেলোয়াড়। এর আগে শ্রীলঙ্কা সিরিজেও দারুণ খেলে সিরিজসেরা হন লিটন। চোপড়া মনে করেন, ব্যাটিংয়ে লিটনের প্রতি অতি নির্ভরশীল বাংলাদেশ, ‘দুর্বলতার কথা বললে বলতে হবে, তারা লিটন দাসের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল। লিটন দাস মানসম্মত খেলোয়াড়, কিন্তু যতটা সামর্থ্য আছে, ততটা ভালো এখনো করতে পারেনি। সে এ মুহূর্তে অধিনায়ক, তাই দল অবশ্যই তার দিকে তাকিয়ে থাকবে, কিন্তু তারা তার ওপর খুব বেশি নির্ভরশীল। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এই দলটার “চোক” করার প্রবণতা আছে।’
বাংলাদেশ দলের আরও কিছু দুর্বলতা তুলে ধরেন চোপড়া, ‘এই দলটা ২১০ থেকে ২২০ রান করার মতো না। তবে ১৬০ থেকে ১৮০ এর লক্ষ্য পেলে দলটি স্বচ্ছন্দে থাকে। এটাও একটা দুর্বলতা। একজন পরিপূর্ণ অলরাউন্ডারের অভাব আছে। অনেক দিন পর বহুজাতিক টুর্নামেন্টে সাকিব নেই। মেহেদী হাসান মিরাজও নেই।’
এশিয়া কাপে বাংলাদেশের সুযোগ নিয়ে চোপড়া বলেছেন, ‘যদি আমরা সুযোগের কথা বলি, তাহলে বলতে হবে তাদের হারানোর কিছু নেই, তবে অনেক কিছু পাওয়ার আছে। কারণ, তারা দীর্ঘদিন ধরে বহুজাতিক টুর্নামেন্টে ভালো করছে না। তারা একসময় নিজেদের সামর্থ্যের চেয়েও ভালো খেলত। ২০০৭ সালে তারা আমাদের (বিশ্বকাপ থেকে) ছিটকে দিয়েছিল। তারা বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছে ঠিকই কিন্তু প্রতিযোগী হিসেবে নয়, আর এটাই তারা এখন করতে চায়।’
তবে বাস্তবতাও মনে করিয়ে দিয়েছেন এই ধারাভাষ্যকার, ‘সত্যি বলতে, তাদের কাজটা কঠিন, যদিও টি-টোয়েন্টিতে যেকোনো দলকে হিসাবের বাইরে রাখা ভুল হবে। তবে আমার মনে হয়, তারা আটকে যাবে। আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কা এই গ্রুপ থেকে কোয়ালিফাই করতে পারে। তাই বাংলাদেশের গল্প লিগ পর্যায় থেকে শেষ হতে পারে।’