আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের তালিকা প্রস্তুত করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ জন্য সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শ্রেণি বা গ্রেডভিত্তিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর তালিকা পাঠাতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে চিঠি দিয়েছে জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা।
📅 ডিসেম্বরে তফসিল, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন
ইসি সূত্রে জানা গেছে, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে ডিসেম্বরে তফসিল ঘোষণা করা হবে। ইতোমধ্যে নির্বাচন ঘিরে কর্মপরিকল্পনা ঘোষণাসহ মাঠ পর্যায়ে প্রস্তুতি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
📋 ৩০ অক্টোবরের মধ্যে কর্মকর্তার প্যানেল প্রস্তুত
নির্বাচনে প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসার নিয়োগের জন্য অক্টোবরের মধ্যে ‘ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল’ প্রস্তুতের নির্দেশ দিয়েছে ইসি।
ইসি উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়েছে, ৩০ অক্টোবরের মধ্যে প্যানেল প্রস্তুত করে ইসি সচিবালয়কে অবহিত করতে হবে।
বর্তমানে দেশে ভোটারের সংখ্যা প্রায় ১২ কোটি ৬৩ লাখ, যা ৩১ অক্টোবরের পর আরও প্রায় ১০ লাখ বৃদ্ধি পাবে।
🧾 ভোটকেন্দ্র ও কর্মকর্তার সংখ্যা
গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রায় ৪২ হাজার ভোটকেন্দ্রে ১ লাখ ৬৭ হাজারের বেশি ভোটকক্ষ ছিল। তখন প্রায় ৯ লাখ ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করেন।
আগামী নির্বাচনে প্রায় ১০ লাখ ৮৯ হাজার কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে ইসি।
প্রতি কেন্দ্রে একজন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, প্রতিটি ভোটকক্ষে একজন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এবং দুজন পোলিং অফিসার থাকেন। পাশাপাশি ১০ শতাংশ অতিরিক্ত কর্মকর্তাও প্রস্তুত রাখা হবে।
👩💼 নারী ভোটকেন্দ্রে নারী কর্মকর্তার অগ্রাধিকার
নারী ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালনের জন্য পর্যাপ্ত নারী কর্মকর্তা রাখার নির্দেশ দিয়েছে ইসি। এজন্য নারী শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর পৃথক প্যানেল তৈরি করতে বলা হয়েছে। নির্ধারিত সংখ্যার বাইরে আরও ১০ শতাংশ অতিরিক্ত নারী কর্মকর্তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
🧠 নিরপেক্ষতা ও দক্ষতার ওপর গুরুত্ব
ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের বাছাইয়ে সততা, দক্ষতা, নিরপেক্ষতা, পদমর্যাদা ও কর্মদক্ষতাকে গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে।
‘বিতর্কিত’ বা রাজনৈতিকভাবে সম্পৃক্ত কোনো কর্মকর্তাকে প্যানেলে না রাখারও নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। প্রয়োজনে কর্মকর্তাদের বয়স, শারীরিক ও মানসিক অবস্থা সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
🏦 যেসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা থাকছেন
ইসি জানিয়েছে, সোনালী, রূপালী, অগ্রণী ব্যাংকসহ সাতটি সরকারি ব্যাংক, এবং ইসলামী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংকসহ ৩৩টি বেসরকারি ব্যাংক থেকে কর্মকর্তারা ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পাবেন।
শুধু ইসলামী ব্যাংক থেকেই ১০ হাজার কর্মকর্তার নাম চাওয়া হয়েছে।
🧾 প্যানেলে অন্তর্ভুক্তি নিয়ম
চিঠিতে বলা হয়েছে—
-
প্রিসাইডিং অফিসার হবেন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা; ক্ষেত্রবিশেষে দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত কলেজ-মাদরাসার শিক্ষক, রাষ্ট্রায়ত্ত বা বেসরকারি ব্যাংক-বিমার কর্মকর্তা, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান বা সহকারী প্রধান শিক্ষক।
-
সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার হবেন দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা, কলেজ-মাদরাসার ডেমনস্ট্রেটর, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
-
পোলিং অফিসার হবেন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ও প্রাথমিক-মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
তবে চতুর্থ শ্রেণির (১৭-২০ গ্রেড) কোনো কর্মচারীকে এই প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। তাদের আলাদা সহায়ক তালিকায় রাখা যেতে পারে।